সুরশ্রী রায় চৌধুরী, আজটকস :বর্তমান সমাজের পরিচিত নাম গ্রে ডিভোর্স’। দীর্ঘ দিনের বিবাহ জীবন ৫০ এই থামছে। জীবনের এই পর্যায়ে এসে দু’জনেই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। চাইছেন ডিভোর্স। ২০-৩০-এর বছরেরও বেশি দাম্পত্য জীবনে ইতি টানাই হলো গ্রে ডিভোর্স’।
বছর পাঁচেক আগেও ‘গ্রে ডিভোর্স’ চর্চায় ছিল না। কিন্তু যত দিন এগোচ্ছে, বিশ্ব এর অন্যান্য দেশের সাথে ভারতেও বাড়ছে
গ্রে ডিভোর্স। সম্প্রতি যীশু সেনগুপ্ত, এআর রহমান, আমির খান, হৃতিক রোশন, সানিয়া মির্জাসহ অনেকেই হাঁটছেন গ্রে ডিভোর্সের পথে। কিন্তু আদতে এটি কী ধরনের বিবাহবিচ্ছেদ, কতটা আইনসম্মত? গত তিন বছরে গ্রে ডিভোর্স সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরে এই সংখ্যাটি তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৬৫ বছর বয়সি কিংবা তাঁর বেশি বয়সি পুরুষের মধ্যে ডিভোর্সের হার ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, এই বয়সি মহিলাদের মধ্যে ডিভোর্সের হার ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এগুলো প্রত্যেকটাই গ্রে ডিভোর্সের অন্তর্গত।
সমাজ এর সাথে সাথে আমাদের ভাবনাচিন্তাতেও এগিয়ে গিয়েছে অনেক। তাই কে কী বলল, কে কী ভাবল – এসব আর খুব একটা ভাবনাচিন্তার বিষয় নয় আমাদের। স্বাভাবিকভাবে সামাজিকতার কথা ভেবে ভালো না লাগলেও বৈবাহিক সম্পর্ককে বয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়বদ্ধতা কমেছে। তার ফলে বেশি বয়সেও অনেকেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
সন্তানকে বড় করতে গিয়ে দাম্পত্য জীবনের একটা বড় অংশ কেটে যায়। বড় হওয়ার পর সন্তানেরা হয় পড়াশোনা কিংবা কর্মসূত্রে বাড়ি ছেড়ে দূরে গিয়ে বসবাস করতে শুরু করে। সেই সময় বাবা-মা একেবারে একা। কিন্তু ততদিনে দুজনের সম্পর্কে শীতলতা চলে এসেছে। অনেক দম্পতি ভাবেন আর দুজনে মিলে একসঙ্গে পথচলা সম্ভব নয়। তাই অনেকেই বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন।
অতীতে কর্মরত মহিলার সংখ্যা ছিল তুলনায় অনেক কম। সেক্ষেত্রে বিয়ের পর যেকোনও চাহিদা মেটানোর জন্য স্বামীর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হত। আর্থিক স্বাধীনতা না থাকায় বিচ্ছেদের কথা ভাবতে পারতেন না অনেকেই। বর্তমানে যত দিন যাচ্ছে কর্মরত মহিলার সংখ্যা বাড়ছে। তাই স্বামীর উপর আর্থিক নির্ভরশীলতা কমছে। বাড়ছে বিচ্ছেদ।
বিবাহিত সম্পর্কের উষ্ণতাকে জিইয়ে রাখার জন্য যৌনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই সেকথা মাথায় রাখেন না। তার ফলে সম্পর্ক শীতল হতে থাকে। আর দীর্ঘদিনের শীতলতা ডেকে আনে বিচ্ছেদ।
তাই সম্পর্কের উষ্ণতাকে হারাতে দেবেন না। মনের মানুষকে জড়িয়ে জাপটে বাঁচুন। মনে রাখবেন, সম্পর্ক ভাঙতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু গড়তে সময় লেগে যায় অনেকটা।
পঞ্চাশে পানসেটে বিবাহিত জীবন!
