আজটকস কলকাতা : পৃথিবী একটি বিরাট মঞ্চ, আর আমরা সবাই সেই মঞ্চের অভিনেতা”—উইলিয়াম শেক্সপিয়রের এই বিখ্যাত উক্তিকে জীবন্ত করে তুলল মনিপাল হসপিটালস নেটওয়ার্কের ইউনিট মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল ও মেডিকা অঙ্কোলজি। অশোকনগর নাট্যায়নের সহযোগিতায় আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী নাট্য সন্ধ্যায়—‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’—মঞ্চে উঠে এল ক্যান্সারজয়ীদের জীবনের সাহসিকতা, সহনশীলতা ও উদযাপন। নাটকটি নির্মিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি ছোট নাটকের ভিত্তিতে—‘আর্য ও অনার্য’, ‘নতুন অবতার’, ‘অন্ত্যেষ্টি সৎকার’, ‘অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি’ ও ‘স্বর্গীয় প্রহসন’। প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব চন্দন সেনের নির্দেশনায় এই অভিনয় শুধু নাটক নয়, এক নির্ভীক জীবনের প্রকাশ। চন্দন সেন জানিয়েছেন, “রঙ্গ ব্যঙ্গ আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগঘন নির্দেশনার অভিজ্ঞতা। ৬৬টি চরিত্রের মধ্যে ১৫-১৬টি ক্যান্সারজয়ীরা ফুটিয়ে তুলেছেন। আমি চাই, আগামীতে সব চরিত্রই তাঁদের হাতে থাকুক। এ মঞ্চ আত্মপরিচয় ফিরে পাওয়ার লড়াই।” মঞ্চে ক্যান্সারজয়ীদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন খ্যাতিমান অভিনেতা ফাল্গুনী চ্যাটার্জী, শান্তিলাল মুখার্জী, মাসুদ আখতার, ঋত্বব্রত মুখার্জী এবং আশোকনগর নাট্যায়নের শিল্পীরা। সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন মেডিকা অঙ্কোলজির চিকিৎসক প্রফেসর (ড.) সুবীর গাঙ্গুলি ও ড. সৌরভ দত্ত। ড. গাঙ্গুলি বলেন, “ক্যান্সার চিকিৎসা কেবল শারীরিক নয়, মানসিক ও আত্মিক শক্তিকেও স্পর্শ করে। আজকের পারফরম্যান্সে আমি গর্বিত।” ড. দত্তের অনুভব, “এই পারফরম্যান্স আমার চিকিৎসকের ভূমিকাকে ছাড়িয়ে এক গভীর মানবিক সংযোগের জায়গা ছুঁয়েছে। এই অনুষ্ঠান সাহস ও জীবনের উৎসব।” আইসিএমআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ১৫.৭ লক্ষে, যা ২০২২ সালের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এই বাস্তবতায় শুধু চিকিৎসা নয়, রোগীর মনোবল, আত্মবিশ্বাস ও সাহসের পেছনে দাঁড়ানোও অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই প্রেক্ষিতে ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। ক্যান্সারজয়ী গৌতম রায়চৌধুরী, অমিতাভ সরকার ও মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এই মঞ্চ আমাদের কাছে যন্ত্রণাকে শক্তিতে রূপান্তরের জায়গা। আমরা শুধু রোগী নই—আমরাও শিল্পী, যোদ্ধা এবং জীবনের কণ্ঠস্বর।” ড. অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মনিপাল হসপিটালস ইস্ট বলেন, “মানবিক আত্মা যেকোনো অসুস্থতার চেয়েও শক্তিশালী। চিকিৎসা কেবল ওষুধ নয়, ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার সম্মিলন। ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।”
মনিপাল এর উপস্থাপনায় ক্যান্সারজয়ীরা সাজঘরে!
