হৃদয়ের তারে নতুন সুর এবার মনিপালে

Inshot 20251028 001838405

কলকাতা, ২৭ অক্টোবর ২০২৫: হৃদরোগ চিকিৎসায় এক নতুন ইতিহাস রচনা করল মণিপাল হাসপাতাল, ঢাকুরিয়া। ভারতের অন্যতম শীর্ষ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মণিপাল হসপিটালস গ্রুপের এই ইউনিটে প্রথমবারের মতো এক প্রবীণ রোগীর শরীরে সফলভাবে বসানো হয়েছে ডুয়াল-চেম্বার লিডলেস পেসমেকার। এই অত্যাধুনিক ও জটিল প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. প্রদীপ ভৌমিক। আশি বছর পেরোনো দুলাল কান্তি ঘোষ, কলকাতার বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, দীর্ঘদিন ধরে মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে পড়া ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানা যায়, তিনি সিক সাইনাস সিনড্রোমে আক্রান্ত—অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের প্রাকৃতিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণকারী সাইনাস নোড কাজ করছিল না, সঙ্গে ছিল গুরুতর ব্র্যাডিকার্ডিয়া বা অস্বাভাবিকভাবে ধীর হার্টবিট। রোগীর বয়স ও কিডনির সমস্যার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা প্রচলিত পেসমেকার প্রতিস্থাপন বা ওপেন-হার্ট সার্জারির পরিবর্তে বেছে নেন এই নতুন প্রজন্মের লিডলেস প্রযুক্তি। কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই মাত্র পনেরো থেকে ত্রিশ মিনিটে সম্পন্ন হয় পুরো প্রক্রিয়াটি, এবং পরের দিনই রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছেন। চিকিৎসক প্রদীপ ভৌমিক জানান, এই মিনিমালি ইনভেসিভ প্রযুক্তি হৃদরোগ চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, বিশেষ করে সেইসব বয়স্ক রোগীদের জন্য যাঁদের একাধিক শারীরিক জটিলতা রয়েছে। আগের সিঙ্গল-চেম্বার ক্যাপসুল পেসমেকারের তুলনায় নতুন ডুয়াল-চেম্বার সিস্টেম আরও উন্নত পেসিং সাপোর্ট দেয়, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। কোনো সেলাই লাগে না, আর এর আয়ু প্রায় পঁচিশ বছর—দীর্ঘমেয়াদি হৃদযন্ত্র সুরক্ষার এক নতুন ভরসা। নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে দুলাল কান্তি ঘোষ বলেন, তিনি প্রায় প্রতিদিন অজ্ঞান হয়ে পড়তেন, ফলে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে নতুন প্রজন্মের পেসমেকার বসানোর পর এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ, আত্মবিশ্বাসী ও সক্রিয় জীবনযাপন করছেন। মণিপাল হাসপাতাল ও চিকিৎসক দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ মনে হচ্ছে, জীবনের ছন্দটা আবার ফিরে পেয়েছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *